Dear visitor, welcome to my world hot events blog. Hope, see you again- thank you.

যে বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই টিনেজ মা-দৈনিক শিক্ষা ডট কম থেকে। - World Hot Events.

Header Ads

যে বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই টিনেজ মা-দৈনিক শিক্ষা ডট কম থেকে।

 

যে বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই টিনেজ মা-দৈনিক শিক্ষা ডট কম থেকে।
Photo credit: dainikshiksha

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে অদ্ভুত এক স্কুল। সেই স্কুলের সব শিক্ষার্থীই টিনেজ মা। তারা ক্লাসে সঙ্গে নিয়ে যান নবজাতক। অপরিণত বয়সে মা হয়েছেন এসব বালিকা। তাদেরকে নিয়ে বিস্তারিত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অনলাইন বিবিসি। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর কথা। হেলেন নামে এক বালিকা স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করছিলেন। শিগগিরই তার বয়স ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার কথা। কিন্তু কেন তার ক্ষুধা এত বৃদ্ধি পেয়েছে তা জানতেন না। এক পর্যায়ে বড় বোনকে জিজ্ঞেস করলেন- এমন ক্ষুধা লাগা কি স্বাভাবিক? জবাবে তার বোন বললেন, হয়তো হতে পারে।


কিন্তু হেলেন ছিলেন খুব মুডি। সহজেই পরিবারের সদস্য ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে ফাইট বাঁধিয়ে রাখতেন। এক পর্যায়ে তার নিয়মিত ঋতুস্রাব বিলম্বিত হলো। জন্মদিনে জানতে পারলেন তিনি অন্তঃসত্ত্বা। হেলেন তা জেনে বললেন- আমি এটা বিশ্বাস করি না।  কিন্তু বন্ধুদের মুখ তো আর আটকে রাখতে পারেন না। এ নিয়ে কথা শোনাতে লাগলেন বন্ধুরা। তার গর্ভস্থ সন্তানের পিতা, তারই সহপাঠী। এ নিয়ে যখন চারদিকে শোরগোল, তখন হেলেন বলেন, ওদের সঙ্গে আমি লড়াই করতে চাই না এ নিয়ে।  শেষ পর্যন্ত অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার শেষের দিকে তিনি স্কুল পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিলেন।  

বাইরে থেকে লিংকন পার্ক হাইস্কুল যুক্তরাষ্ট্রের অন্য স্কুলগুলোর মতোই দেখায়। ইটের গাঁথুনি। বাইরে পার্ক করা স্কুলবাস। বাতাসে উড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা। কিন্তু  ভেতরের পরিস্থিতি অন্য। ক্লাসে যাচ্ছেন টিনেজরা। তাদের কথা বলার শব্দ। সঙ্গে আছে শিশুদের কান্নার শব্দ। ছোট্ট শিশুর মুখের নানা রকম শব্দ। এর দেয়ালে পোস্টারগুলোতে অন্তঃসত্ত্বাদের সার্ভিস এবং প্যারেন্টিং ক্লাসে যোগ দিতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।  মূল ভবনের পাশেই আছে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার। এই স্কুলটি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তের টেক্সাসে ব্রাউনসভিলেতে। সেখানে বিশেষায়িত শিক্ষা দেয়া হয়। পড়ানো হয় টিনেজ মায়েদের।

 তিন দশকে যুক্তরাষ্ট্রে টিনেজ মায়েদের সন্তান জন্ম দেয়ার হার কমে গেছে। কিন্তু তরুণ হিস্প্যানিক মেয়েদের মধ্যে সন্তান জন্ম দেয়া সাধারণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের মধ্যে সাধারণের তুলনায় এমন সন্তান জন্ম দেয়ার হার অনেক বেশি। ল্যাটিনোদের মধ্যে যেকোনো গ্রুপের চেয়ে টিনেজ মেয়েদের অন্তঃসত্ত্বার হার সর্বোচ্চ। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এ বছর সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাত বন্ধের পক্ষে রায় দেয়। এতে টিনেজ মেয়েদের সন্তান জন্মদান বৃদ্ধি পেয়ে থাকতে পারে। লিংকন পার্ক হাইস্কুলের সব শিক্ষার্থীই টিনেজ মা।

২০০৫ সাল থেকে এক্সক্লুসিভভাবে তাদের সেবা দেয়া হচ্ছে। এমন টিনেজারদের বয়স ১৪ বছর থেকে ১৯ বছর। এদের সবাই ল্যাটিনো। এই শহরটিতে জনসংখ্যার শতকরা ৯৪ ভাগই ল্যাটিনো। তাদের মধ্যেই টিনেজ বয়সে সন্তান জন্ম দেয়ার হার সর্বোচ্চ। এদের মধ্যে বেশির ভাগই কম আয়ের। অল্প কিছু আছেন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী মেক্সিকান অধিবাসী। তারা মাতামোরোস, তামাউলিপাস সীমান্ত অতিক্রম করে প্রতিদিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ক্লাসে যোগ দেন। মাতৃত্ব যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রস্থলে, তখন লিংকন পার্ক হাইস্কুল সুযোগ করে দিচ্ছে টিনেজ মেয়েদের জীবন চালানোর পথ বাৎলে দিতে।  হেলেন যে কারণে লিংকন পার্ক হাইস্কুলে যোগ দিতে রাজি হয়েছেন তা হলো, ক্লাসে যোগ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্কুলে নিজের সন্তানকে নিয়ে যেতে পারেন। এ বছর জুনে তিনি ক্লাসের ফাঁকে বিবিসি’র সঙ্গে কথা বলেছেন। তার ব্যাকপ্যাকে বইপত্র, জার্নাল। সঙ্গে আছে শিশুদের ডায়াপার, পোশাক।  হেলেনের মেয়ের নাম জেনিন। বয়স আট মাস। হেলেন বলেন, এই স্কুলটিকেই মনে হয়েছে আমার জন্য। এখানে একই সঙ্গে নিজের কথা এবং আমার বাচ্চার কথা ভাবতে পারি। বর্তমানে এই স্কুলে আছেন প্রায় ৭০ জন টিনেজ মা। এই সংখ্যা বছরের বিভিন্ন সময় বাড়ে-কমে। অনেক তরুণী মা আবার সন্তান প্রসবের পরে ফিরে যান ক্লাসে। বিবিসি যে সময় লিংকন পার্ক সফর করে তখন মাধ্যমিক স্কুলে যোগ দিয়েছেন ১৪ বছরের নিচে সাত জন টিনেজার। 

সঙ্গে ছিলেন তিন ছাত্রী, যাদের তিনটি সন্তান আছে।  ওই শহরের অন্য স্কুলের মতো একই পাঠ্যসূচি এই স্কুলে। সেখানে সব শিক্ষার্থীই তাদের পরীক্ষায় পাস করবেন বলে আশা করছেন। যেসব বাসে করে এসব শিক্ষার্থীকে স্কুলে নেয়া হয় তার সবটাতে আছে শিক্ষার্থীদের বাচ্চা বহন করার জন্য কার-সিট। ভোরে ঘুম থেকে জেগে এসব শিক্ষার্থী নিজেরা নাস্তা করেন, সন্তানকে নাস্তা করান। বিনামূল্যে সন্তানদের তারা ডে-কেয়ার সেন্টারে দিতে পারেন। বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসকের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকার জন্য স্কুলে অনুপস্থিত থাকা অনুমোদিত। একটি শ্রেণিকক্ষে সায়েন্সের শিক্ষিকার জন্য রুমের কর্নারে আছে লম্বা ওয়ারড্রব। তাতে মায়েদের জন্য বিশেষ পোশাক রাখা আছে। যদি প্রয়োজন হয়, মায়েরা তা ব্যবহার করতে পারেন।  হেলেনের মতো একজন টিনেজ মা অ্যালেক্সিজ। যখন তিনি নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা হিসেবে আবিষ্কার করেন তখন তার বয়স মাত্র ১৫ বছর। বিষয়টি নিশ্চিত হতে বাড়িতে তিনবার পরীক্ষা করেন। কিন্তু প্রতিবারই পজেটিভ ফল আসে। তারপরও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ফলে ডাক্তারের দ্বারস্থ হলেন। চিকিৎসক তাকে নিশ্চিত করলেন যে একটি পুত্রসন্তানের মা হতে চলেছেন তিনি। 

অ্যালেক্সিস বলেন, এটা আমার জন্য খুব কঠিন বিষয় ছিল। আমি স্কুল থেকে ঝরে পড়তে চাইনি। এমন সময় তিনি লিংকন পার্ক হাইস্কুলের সন্ধান পেয়ে যান। এখন তিনি এক সন্তানের মা। সন্তানের বয়স প্রায় এক বছর।  শ্রেণিকক্ষের ভেতরে রয়েছে গভীর সহানুভূতি ও অন্তরঙ্গ পরিবেশ, যা বাইরের যে কারও কাছে বিস্ময়কর মনে হতে পারে। তবে এ বিষয়টি শিক্ষার্থী এবং স্টাফদের জন্য খুবই প্রাকৃতিক। মঙ্গলবার সকালে গণিতের ক্লাসে বসে ছিলেন অ্যালেক্সিস। তিনি শিক্ষক অ্যারেডোন্দোকে বলেন যে, নতুন বছরের জন্য নিবন্ধিত হয়েছেন তিনি। বলেন, আমি এই তালিকার শীর্ষে আছি। এমন সময় শ্রেণিকক্ষের দরজায় তাদের চোখ চলে গেল। ক্লাসের শেষের দিকে আর একজন ছাত্রী প্রবেশ করলেন। দৃশ্যত তিনি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার প্রায় শেষ প্রান্তে। তিনি খুব ধীরে হাঁটছেন। একটু দুলে দুলে হাঁটছেন। সব মেয়ে তাকে দেখে হাসলো। অ্যালেক্সিস এগিয়ে গিয়ে তার বাহু ধরলেন। অন্য সহপাঠীরাও ঘনিষ্ঠ হলেন। অ্যালেক্সিস এই নতুন বালিকাকে বললেন, আমার ইচ্ছে করছে তোমার পেটটা একটু স্পর্শ করি।  ক্লাস শিক্ষক অ্যারেডোন্দো শিশুদের যত্ন নেয়ার জন্য সবচেয়ে অনভিজ্ঞ। তবে তিনি অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষার্থীদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি জানতে চাইলেন- যখন মেয়েরা তোমাকে বলবে তার এপিডুরাল নামের বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন, তখন আপনি কি মনে করেন? অন্তঃসত্ত্বা ওই বালিকা হাসতে হাসতে বলে ওঠেন- আমি মনে করি আমার এটা প্রয়োজন হতে যাচ্ছে। 

সঙ্গে সঙ্গে অ্যালেক্সিস যোগ করেন, তোমার অনেক ব্যথা হচ্ছে। সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর হিসাব মতে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের  ১৫ থেকে ১৯ বছর এবং ১৫ বছর বয়সী মেয়েদের প্রতি ১০০০ জনের মধ্যে ১৫ জনই সন্তান জন্ম দিয়েছেন। তবে ১৫ বছরের নিচে টিনেজার এমন মায়েদের ডাটা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। সার্বিকভাবে এই জন্মহার কমে এলেও এখনো জাতীয় গড়ের উপরে রয়েছে টেক্সাসে এমন জন্মহার। টিনেজ বয়সে সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষ ১০ রাজ্যের মধ্যে আছে এই রাজ্য। ব্রাউনসভিলে শহরে টিনেজ অন্তঃসত্ত্বার শতকরা হার ১২।  টিনেজ বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়া, সন্তান জন্মদানের জন্য বেশ কিছু ফ্যাক্টর কাজ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, টেক্সাসে আছে কঠোর গর্ভপাত বিষয়ক আইন। যৌন শিক্ষা দেয়া হয় না স্কুলগুলোতে। উদারপন্থি টেক্সাস ফ্রিডম  নেটওয়ার্কের মতে, টেক্সাসের সরকারি স্কুলগুলোতে শুধু যৌন শিক্ষা থেকে বিরত থাকে শতকরা ৫৮ ভাগ। শতকরা ২৫ ভাগ স্কুলে যৌন শিক্ষার বিষয়ে কোনো শিক্ষাই দেয়া হয় না। লিংকন পার্ক হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সিন্থিয়া কার্ডেনাস বলেছেন, আমরা যদি এসব বিষয়ে শিক্ষা, তথ্য তাদের সঙ্গে শেয়ার না করি, তাহলে তারা শিখতেও পারবে না।

টিনেজ শিক্ষার্থীকে কোনো সুযোগই দেয়া হয় না। ফলে টেক্সাসের টিনেজাররা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। যদি একবার এমনটা ঘটে তখন তাকে জটিল স্বাস্থ্যসেবার অধীনে আসতে হয়। আর যদি গর্ভপাতের কঠোর আইন মেনে না চলেন তাহলে শাস্তির মুখে পড়তে হয়। এ কারণে এ রাজ্যের অন্তঃসত্ত্বা টিনেজাররা গর্ভপাত করাতে চলে যান অন্য রাজ্যে। বিশেষ করে একেবারেই অল্প বয়সী অন্তঃসত্ত্বা বালিকারা এমন সুযোগ বেছে নেয়। তবে অন্য রাজ্যে গিয়ে গর্ভপাত করাতে মোট যে পরিমাণ খরচ হয় তা কম আয়ের মেয়েদের পক্ষে বহন করা সম্ভব হয় না। এ পরিস্থিতিতে পড়ে হেলেন প্রথমদিকে গর্ভপাত করানোর কথা অথবা মেয়েকে দত্তক দেয়ার কথা ভেবেছিলেন। তিনি যে সিদ্ধান্তই নেবেন, তাতে তার মা সমর্থন দেয়ার কথা জানান। 

যখন কন্যা সন্তান জন্ম দিলেন, তিনি তার চেহারা দেখে তাকে নিজের কাছেই রাখার সিদ্ধান্ত নেন।  হেলেন বলেন, আমার কাছে শ্রেষ্ঠ জিনিস হলো আমার সন্তান। আমার কাছে সে-ই সব। হাইস্কুলের পড়া শেষ করতে আর মাত্র এক বছর বাকি হেলেনের। এখন তিনি স্বপ্ন দেখলেন কলেজের। কন্যার সব ব্যয় তিনিই বহন করতে চান। কিন্তু বাস্তবতা হলো টিনেজ মায়েদের মধ্যে মাত্র অর্ধেকই পারেন হাইস্কুলের পড়া শেষ করতে। হাতেগোনা দু’চারজন উচ্চ শিক্ষা নিতে যান। লিংকন পার্কে যোগ না দিলে তার পরিণতি কি হতো? এমন প্রশ্নের জবাবে হেলেন বলেন, সততার সঙ্গে বলছি আমার কোনো ধারণাই নেই। হয়তো ঘরের ভেতর বাচ্চাকে নিয়ে লড়াই করতে হতো।

সূত্র: দৈনিক শিক্ষা ডট কম

পোস্টের নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ‘‘ফেসবুক পেজে  লাইক দিয়ে রাখুন

 

আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে

শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

No comments

Theme images by RBFried. Powered by Blogger.